আরবী তারিখঃ এখন ৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি মুতাবিক ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রোজ শুক্রবার, সময় দুপুর ১:০৮ মিনিট
এলানঃ-
১৪৪৫-১৪৪৬ হিজরী, ২০২৪-২০২৫ ইং এর মাসিক সুন্নতী ইজতেমা সমূহ
* ২৫ এপ্রিল ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ মে ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ জুন ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৫-২৬ জুলাই ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৯ আগষ্ট ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৬-২৭ সেপ্টেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৪ অক্টোবর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৮-২৯ নভেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৬ ডিসেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ জানুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ ফেব্রুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* মার্চ ২৫ ইং এজতেমা সালেকীনদের জন্য

অমুসলিম দেশের নাগরিকত্ব গ্রহনের বিধান -মুফতি নুরুদ্দিন মাসরুর দা. বা.

পরিস্থিতি ও উদ্দেশ্যে হিসেবে অমুসলি দেশের নাগরিকত্ব গ্রহনের বিধানও ভিন্ন ভিন্ন হবে।

১/ যদি নিজ দেশে নির্যাতন বা অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ হওয়ার আশঙ্কা থাকে বা রাষ্ট্র কর্তৃক সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার আশঙ্কা থাকে এবং অমুসলিম দেশের নাগরিক্ব গ্রহণ ব্যতিত তার কেন উপায় না থাকে তাহলে তার জন্য দু‘টি শর্তে অমুসলিমদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ জায়েয হবে।

(ক) নিজের দীন হেফাজতের ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করা।

(খ) সেখানের সকল ধরণের শরীয়ত বিরোধী কার্জকলাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখা ।

দলিল : (ক) সাহাবিগণ মক্কাবাসি কাফের জনগোষ্ঠী কতৃক নির্যাতিত হওয়ার পর হাবাশায় (ইথিওপিয়া) হিজরত করেন এবং সেখানে অবস্থান করেন। এমনকি কোন কোন সাহাবি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মদিনায় হিজরতের আগ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেছেন। আবু মূসা আশারি রা. সেখান থেকে ফিরেছেন খয়বার যুদ্ধের সময় তথা সপ্তম হিজরিতে।

(খ) নিজেকে সবধরণের জুলুম থেকে রক্ষা করা একজন মুসলমানের মানবিক ও ধর্মীয় অধিকার।

২/ যদি কোন মুসলামানের জীবিকা নির্বাহের আবশ্যকীয় উপকরণ না থাকে এবং তার জন্য অমুসলিম দেশের নাগরিকত্ব ব্যতিত আবশ্যকীয় উপকরণের জোগান সম্ভব না হয় তাহলে তার জন্য পূর্বে উল্লিখিত দু‘টি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে অমুসলিম দেশে যাওয়া জায়েয।

দলিল : অন্যন্য ফরজের পর জীবিকা উপার্জন করাও ফরজ।আর এক্ষেত্রে ইসলাম জীবিকা উপার্জনের জন্য কোন স্থান নির্ধারণ করে দেয়নি । আল্লাহ তায়ালা বলেন,তিনিই তো মহান সত্তা যিনি ভূপৃষ্ঠকে তোমাদের অনুগত করেছেন। তোমরা এর বুকের উপর চলাফেরা করো এবং আল্লাহর দেয়া রিযিক খাও।( আল-কুরআন -মূলক,আয়াত :১৫)

৩/ যদি কোন মুসলমান ইসলামের দাওয়াতের জন্য বা সেখানে অবস্থানরত মুসলমানদের নিকট শরীয়তের বিধিবিধান পৌঁছানো জন্য নাগরিকত্ব গ্রহণ করে তখন সে উক্ত কাজের জন্য সওয়াব পাবে।

দলিল : অসংখ্য সাহাবি ও তাবেয়ীন রা. উক্ত প্রসংশনীয় উদ্দেশ্যে অমুসলিমদেশে বসবাস করেছেন। এবং একে তাদের মহত্ব হিসেবে গণনা করা হয়।

৪/ যদি কোন ব্যক্তির নিজ দেশে সাধারণ জীবন উপকরণ থাকে এবং সে সম্পদ বৃদ্ধি ও বিলসিতার জন্য কোন অমুসলিম দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে তাহলে (সেখানে পূর্ণ ইসলাম পালনের অঙ্গিকার সত্ত্বেও) তা জায়েয হবেনা। (মাকরূহে তাহরীমি)

দলিল : কেননা এখানে নিজেকে বিনাপ্রয়োজনে বিস্তৃত গোনাহের দিকে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। এবং বিনা প্রয়োজনে নিজেকে চারিত্রিক ও ধর্মীয় অধপতনেরর ঝুঁকিতে ফেলা হচ্ছে। অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে যারা শুধুমাত্র বিলাসিতার জন্য অমুসলিম দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে তারা কাফেরদের প্ররোচনায় দ্রুত প্রভাবিত হয়। এই কারনে হাদিসে নিতান্ত প্রয়োজন ব্যতীত অমুসলিমদের সাথে বসবাসের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসছে।“হযরত সামুরা বিন জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত,রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি অমুসলমানের সাথে একত্রিত হয় এবং তাদের সাথে বসবাস করে সে তাদের অন্তর্ভুক্ত।”(সহীহু আবু দাউস ২৭৮৭)

“হযরত যারির বিন আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি এমন মুসলমানের ব্যাপারে দায়মুক্ত যে অমুসলিমদের মাঝে বসবাস করে।”(মাআলিমুস সুনান,৪৩৭/৩“ মাকহুল রাহি.থেকে রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত তিনি বলেন,তোমরা দুশমনদের সম্মুখে সন্তান-সন্তুতি ছেড়ে রেখোনা।( মারাসিলে আবু দাউস, তাহযিবুস সুনান, ৪৩৭/৩)৫/

যদি কেউ অমুসলিম দেশের নাগরিকত্বকে গর্বের মনে করে বা মুসলিম দেশ থেকে অমুসলিম দেশের নাগরিকত্বকে প্রাধান্য দেয় বা জীবনযাত্রায় অমুসলিমদের সাদৃশ্যতা অর্জন লক্ষ্য হয় ,তাহলে তার জন্য অমুসলিমদেশের নাগরিকত্ব গ্রহন করা হারাম। এটা এত স্পষ্ট বিষয় যে, এ ব্যাপারে আলাদা কোন দলিল উল্লেখের প্রয়োজন নেই।

মূল(আরবি) : মুফতি তাকি উসমানী হাফি.

অনুবাদ : মুফতি নুরুদ্দিন মাসরুর দা. বা.

Loading