আরবী তারিখঃ এখন ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি মুতাবিক ২৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রোজ শুক্রবার, সময় রাত ৯:৫৫ মিনিট
এলানঃ-
১৪৪৫-১৪৪৬ হিজরী, ২০২৪-২০২৫ ইং এর মাসিক সুন্নতী ইজতেমা সমূহ
* ২৫ এপ্রিল ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ মে ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ জুন ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৫-২৬ জুলাই ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৯ আগষ্ট ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৬-২৭ সেপ্টেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৪ অক্টোবর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৮-২৯ নভেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৬ ডিসেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ জানুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ ফেব্রুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* মার্চ ২৫ ইং এজতেমা সালেকীনদের জন্য

আউলাদে রসুল বলা প্রসঙ্গ, আউলাদে রসুল এখনো আছে কি না?

ওলাদ (ولد) শব্দের অর্থ পুত্র বা কন্যা সন্তান। আওলাদ শব্দটি আরবী ولد (ওলাদ) এর বহুবচন। যার অর্থ পুত্র বা কন্যা সন্তানগণ এবং এর আরেকটি অর্থ অর্থ হচ্ছে বংশধর (পুত্র বা কন্যা)।

বংশধর বা أولاد (আউলাদ) শব্দটির সমার্থক আরবী শব্দ হচ্ছে —

জুররিয়্যাতুন (ذرية), নাসল্ (نسل), সুলালাতুন (سلالة), নাতিজাতুন (نتيجة)।

উদাহরণ –

وَلَدِ آدَمَ

আদমের বংশধর

من نسل الرسول

রাসুলের বংশধর

উর্দু ও ফার্সিতে এই অর্থে নিচের দুটি শব্দ বহুল ব্যবহৃত হয় —

খানদান (خاندان), নাসল্ (نسل)।

উদাহরণ –

خاندان رسول

khandane rasul / খান দানে রাসূল

রাসুলের বংশধর

নিচের হাদীস পাকের মাধ্যমে আমরা জানতে পারব যে أولاد (আউলাদ) শব্দটি বংশধর অর্থে ব্যবহৃত হয়। যেহেতু উক্ত হাদীসে পাকে “أولاد (আউলাদ) শব্দটি বংশধর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে”। খোদ নাবী কারীম ﷺ এর বাণী থেকে প্রমাণিত যে أولاد (আউলাদ) শব্দটি বংশধর অর্থে ব্যবহৃত হয়।

মিশকাত শরীফ, অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ নবীকূল শিরোমণি ﷺ এর মর্যাদা সমূহ, প্রথম পরিচ্ছেদে বর্ণিত হয়েছে,

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَأَوَّلُ مَنْ يَنْشَقُّ عَنْهُ الْقَبْرُ وَأَوَّلُ شَافِعٍ وَأَوَّلُ مُشَفَّعٍ . رَوَاهُ مُسْلِمٌ

رواہ مسلم (3 / 2278)، (5940) ۔

(صَحِيح)

হাযরাত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলে কারীম ﷺ ইরশাদ করেছেন, আমি কিয়ামতের মাঠে সকল আদম সন্তানদের তথা বংশধরদের সরদার (أَنَا سَيِّدُ وَلَدِ آدَمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ) হব। আমিই প্রথত্র ব্যক্তি যাকে প্রথমে কবর থেকে উঠানো হবে। আমিই একমাত্র ব্যক্তি যে প্রথমে শাফা‘আত করবে এবং যার শাফা‘আত প্রথমে গ্রহণ করা হবে’।

রেফারেন্স —

১/ মিশকাত হা/৫৭৪১।

রেফারেন্স —

২/ মুসলিম ৩/ ২২৭৮,

৩/ আবু দাউদ ৬৪৭৩,

৪/ তিরমিযী ৩৬১৬,

৫/ ইবনু মাজাহ ৪৩৫৮,

৬/ মুসনাদে আহমাদ ১০৯৮৫,

৭/ মুসান্নাফ ইবনু আবী শায়বাহ ৩১৭২৮,

৮/ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব ৩৫৪৩,

৯/ দারিমী ৪৯,

১০/ সহীহ ইবনু হিব্বান ৬২৪২,

১১/ হিলইয়াতুল আওলিয়া ৪/৭৭,

১২/ আল মুজামুল কাবীর লিত্ব তবারানী ২৬১০,

১৩/ আস সুনানুল কুবরা লিল বায়হাকী ১৮১৬৮।

সুতরাং আওলাদে রাসুল অর্থ রাসূলের বংশধর অর্থাৎ যারা প্রকৃতপক্ষে বংশপরম্পরায় রাসুলে কারীম ﷺ এর বংশের সাথে গিয়ে মিলেছে তারাই আওলাদে রাসুল বা রাসূলের বংশধর।

✦ আউলাদে রসুল এখনো আছে কিনা

عن النبي صلى الله عليه وسلم ( كُلُّ سَبَبٍ وَنَسَبٍ مُنْقَطِعٌ يَوْمَ الْقِيَامَةِ إِلاَّ سَبَبِي وَنَسَبِي )

প্রিয়নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “প্রত্যেক রক্তের সম্পর্ক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক কেয়ামতের আগে কেটে যাবে একমাত্র আমার রক্তের সম্পর্ক ও আত্মীয়তার সম্পর্ক টিকে থাকবে (কেয়ামত পর্যন্ত)।”

এই হাদিস শরীফটি অসংখ্য সাহাবায়ে কেরাম রহঃ গণ থেকে বর্ণিত হয়েছে। যেমন —

১/ মুসনাদ আহমদ ইবনে হাম্বলে হজরত আবু সায়ীদ খুদরী রা: থেকে ১৭/২২০,

২/ তাবরানী মুজামুল কাবিরে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা: থেকে ৩/১২৯,

৩/ মুস্তাদরাকুল হাকিমে ৩/১৪২,

৪/ বায়হাকি তাঁর সুনানে ৭/১১৪ হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: থেকে,

৫/ মুসনাদ আহমদ ইবনে হাম্বলে মিসওয়ার ইবনে মাখরামা রা: থেকে ৩১/২০৭।

হাদীসে শাস্ত্রে সর্বাধিক ভুলের স্বীকার বলে খ্যাত আহলে হাদিস বা সালাফি শায়খ আলবানী সিলসিলাতু আহাদিসে সাহিহা কিতাবে (হাদিস নং-২০৩৬) এই হাদিস শরীফকে সহিহ বলতে বাধ্য হয়েছেন।

কাজেই রাসুলে কারীম ﷺ এর নাসাব বা রক্তের সম্পর্ক অকাট্য থাকার কারণে আউলাদে রাসুলের ধারা অব্যাহত রয়েছে। এখনো পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে আউলাদে রাসুলগণ রয়েছেন। আল্লাহ্ সর্বজ্ঞ। ইল্লা মাশাআল্লাহ।

Loading