আরবী তারিখঃ এখন ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি মুতাবিক ২৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, রোজ শুক্রবার, সময় রাত ১২:০১ মিনিট
এলানঃ-
১৪৪৫-১৪৪৬ হিজরী, ২০২৪-২০২৫ ইং এর মাসিক সুন্নতী ইজতেমা সমূহ
* ২৫ এপ্রিল ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ মে ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ জুন ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৫-২৬ জুলাই ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৯ আগষ্ট ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৬-২৭ সেপ্টেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৪ অক্টোবর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ২৮-২৯ নভেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৬ ডিসেম্বর ২৪ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* ৩০-৩১ জানুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার ফজর-শুক্রবার মাগরিব পর্যন্ত সালেকীনদের জন্য
* ২৭ ফেব্রুয়ারী ২৫ ইং বৃহস্পতিবার মাগরিব-ইশা মাদরাসার সকলের জন্য
* মার্চ ২৫ ইং এজতেমা সালেকীনদের জন্য

আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের মৌলিক আকিদা সমূহ

একজন মানুষের ঈমান ও আমল নির্ভর করে তার আকিদা ও বিশ্বাসের উপর, যার আকীদা-বিশ্বাস যত ভালো হবে, কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী হবে, তার আমল আল্লাহ তা’আলার কাছে ততো বেশি কবুল হবে, যারা আকিদার মধ্যে সমস্যা আছে, সে বাহ্যিক সুরতে যাই হোক না কেন, তার আমল আল্লাহ তা’আলার কাছে কবুল হবে না৷ এজন্য আমাদের আকিদা দুরস্ত করা নেহায়েত জরুরী৷ আমাদের শাইখ হযরতওয়ালা শাহ মুফতি আব্দুর রহমান রহঃ মাদারে ইলমি মারকাজুল ইসলামি (ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার) বাংলাদেশ বসুন্ধরা ঢাকায় প্রতিদিনের একটি নেজাম জারি করেছেন৷ অর্থাৎ প্রতিদিন সকালে আসবাক শুরু করার আগে ইসলামের মৌলিক আকিদা সমূহ একবার পড়িয়ে শোনানো হয়, যেগুলো আমাদের জন্য জানা অত্যাবশ্যকীয়৷ হযরতওয়ালা রহঃ সব সময় চাইতেন মুসলমানদের মধ্যে এগুলোর বেশি মুজাকারা করা হোক, উম্মত জানুক এবং আমল করার চেষ্টা করুক৷ এজন্য এর জন্য ইসলামের মূল আকিদা সমূহ হযরতওয়ালা রহঃ বাতানো পদ্ধতিতে এখানে উল্লেখ করা হলো৷ আক্বীদাগুলো কোন কোন কিতাব থেকে নেয়া হয়েছে, কতটুকু নেয়া হয়েছে, তা বিস্তারিত মা’মুলাতে মাসুরা নামক কিতাবে দ্রষ্টব্য৷ তাই আমলের ক্ষেত্রে এবং প্রমাণের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির কিছুই নেই৷

ইসলামের মৌলিক আকিদা সমূহ

১. মহান আল্লাহ তাআলা এক তার কোন শরীক নেই৷

২. আল্লাহ তাআলা অনাদি, তার গুণাবলী সমূহও অনাদি৷

৩. আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত সবকিছুই সৃষ্ট৷

৪. জ্ঞান ও চক্ষু আল্লাহ তা’আলাকে আয়ত্ত করতে পারে না৷

৫. আল্লাহ তাআলা কারো মুখাপেক্ষী নন, কিন্ত সবই তাঁর মুখাপেক্ষী৷

৬. আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নাই৷

৭. আল্লাহ তাআলা চিরঞ্জীব, তার মৃত্যু নাই৷

৮. আল্লাহ তাআলার সমকক্ষ কেহই নয়৷

৯. আল্লাহ তাআলার সাদৃশ্য কিছুই নাই৷

১০. আল্লাহ তাআলা প্রকাশ্য ও গোপন সব কিছুই জানেন৷

১১. আল্লাহ তাআলা সর্বদ্রষ্টা, তার দৃষ্টির আড়ালে কিছুই নাই৷

১২. আল্লাহ তা’আলা মৃদু ও উচ্চ স্বর সবকিছুই শোনেন৷

১৩. আল্লাহ তাআলার ইচ্ছা ছাড়া কিছুই হয় না৷

১৪. আল্লাহ তাআলা সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, তার ক্ষমতার বাহিরে কিছুই নাই৷

১৫. আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেউ গায়েব জানেন না, এমন কি নবী আঃ ও ওলীগণও জানেন না৷

১৬. আল্লাহ তাআলা ছাড়া কেহই হাজির-নাজির নন, এমনকি নবী আঃ ও ওলীগণও নন৷

১৭. আল্লাহ তাআলা মাখলুক নন, আল্লাহ তায়ালার কোন সন্তানও নাই, স্ত্রীও নাই৷

১৮. আল্লাহ তাআলা সমস্ত সৃষ্টির স্রষ্টা৷

১৯. আল্লাহ তাআলা সমস্ত সৃষ্টির পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজিকদাতা৷

২০. আল্লাহ তাআলার হুকুম ছাড়া কোন কিছুর জীবন লাভ ও মৃত্যু হতে পারে না৷

২১. আল্লাহ তাআলাই সমস্ত রোগের শেফা দাতা এবং প্রয়োজন পূরণকারী৷

২২. আল্লাহ তাআলা ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করা এবং অন্য কারো নামে মান্নত করা কুফরি৷

২৩. কবরবাসী থেকে সাহায্য চাওয়া শিরক৷

২৪. ভালো-মন্দ সমস্ত ভাগ্যের নির্ধারণ আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকেই হয়৷

২৫. আমরা সমস্ত নবী রসুলগণের আঃ উপর ঈমান রাখি৷

২৬. আমরা সমস্ত নবীগণ নিষ্পাপ বিশ্বাস করি৷

২৭. আমাদের নবী হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তাআলার বান্দা ও তাঁর রাসূল৷

২৮. হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকল মানব-দানব এর নিকট প্রেরিত৷

২৯. হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী৷

৩০. হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সশরীরে জাগ্রত অবস্থায় মেরাজে যাওয়ার সত্য৷

৩১. হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর আসল ও ছায়া কোনরূপ নবীই নাই৷

৩২. হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পর নবুওয়াতের দাবিদার ও তার অনুসারীরা সবাই কাফের৷

৩৩. হযরত ঈসা আলাইহিস সালামের জীবিত থাকা এবং জীবিত অবস্থায় তাকে আসমানে উঠিয়ে নেওয়া সত্য৷

৩৪. হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আসমান থেকে কেয়ামতের পূর্বে অবতরণ করবেন, আমাদের নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শরিয়তের অনুসারী হয়ে৷

৩৫. হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে পুত্র বাদ ও ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী সবাই কাফের৷

৩৬. কুরআন ও সুন্নাহ এর অস্বীকার, নবীগনের আঃ অবমাননা এবং শরীয়তের বিধি-বিধানের উপহাস করা কুফরি৷

৩৭. নবীগণের আঃ মু‘জিজাসমূহ সত্য৷

৩৮. নবীগণ আঃ নিজ নিজ কবরে জীবিত আছেন৷

৩৯. সাহাবায়ে কেরাম রাঃ সর্বশ্রেষ্ঠ উম্মত৷

৪০. আমরা সমস্ত সাহাবীগনের রাঃ আদালত স্বীকার ও বিশ্বাস করি৷

৪১. আমরা সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, হযরাত সাহাবায়ে কেরাম রাঃ আল্লাহ তাআলার নিকট পছন্দনীয় ও জান্নাতের সুসংবাদপ্রাপ্ত৷

৪২. সাহাবা রাঃ এর মুহাব্বত ঈমানের অঙ্গ৷

৪৩. সাহাবা রাঃ এর সঙ্গে বিদ্বেষ এবং তাদের সমালোচনা মুনাফেকি৷

৪৪. খুলাফায়ে রাশেদীনের মর্যাদা তাদের খেলাফতের শ্রেণী অনুযায়ী৷

৪৫. সাহাবায়ে কেরাম রাঃ পরস্পর যুদ্ধে ও মতভেদে হকের উপর ছিলেন৷

৪৬. আউলিয়াগণ আল্লাহ তাআলার নিকট বিশেষ মর্যাদার অধিকারী৷

৪৭. ওলীগণের স্থান নবী আঃ ও সাহাবাগণের রাঃ নিচে৷

৪৮. ওলীগণের কারামত সমূহ সত্য৷

৪৯. আকাবির বুযুর্গানে দ্বীনের সম্মান প্রদর্শন এবং মাযহাবের ইমামগণের তাকলীদ করা অত্যাবশ্যকীয় জরুরী৷

৫০. আমরা আল্লাহ তাআলার সমস্ত ফেরেশতাগনের উপর ঈমান রাখি৷

৫১. আমরা আল্লাহ তাআলার অবতীর্ণ সমস্ত কিতাব সমূহের উপর ঈমান রাখি৷

৫২. আমরা বিশ্বাস করি যে, কুরআন পাক আল্লাহ তাআলার কালাম৷

৫৩. কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পর অতীতের সমস্ত আসমানী কিতাব রহিত হয়ে গেছে৷

৫৪. শেষ যুগে সায়্যিদ শাহ ইমাম মাহদী আলাইহিস সালামের খিলাফত সত্য৷

৫৫. দাজ্জাল এবং ইয়াজুজ মাজুজের প্রকাশ সত্য৷

৫৬. পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয় এবং দাব্বাহ নামক প্রাণীর প্রকাশ সত্য৷

৫৭. কেয়ামতের অন্যান্য আলামত সমূহ এবং শিঙ্গায় ফুঁৎকার সত্য৷

৫৮. মুনকার নাকিরের প্রশ্ন, কবরের আযাব ও শাস্তি সত্য৷

৫৯. মৃত্যুর পর পুনরুত্থান এবং হাশর সত্য৷

৬০. হাউজে কাউসার এবং সুপারিশ সত্য৷

৬১. ভালো-মন্দ আমলের ওজন, হিসাব নিকাশ এবং আমলনামা সত্য৷

৬২. পুলসিরাত, জান্নাত এবং জাহান্নাম সত্য৷

৬৩. কিয়ামতের দিবসে আল্লাহ পাকের সাথে মুমিনদের সাক্ষাৎ সত্য৷

৬৪. মুমিনদেরদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাত এবং কাফেরদের জন্য চিরস্থায়ী জাহান্নাম সত্য৷

৬৫. ফাসেককে কাফের বলা যাবে না এবং ফাসেক চিরকাল জাহান্নামে থাকবে না৷

৬৬. আল্লাহ তাআলার আরশ কুরসী সর্ববৃহৎ সৃষ্টি৷

৬৭. লৌহ কলম এবং আলমে আরওয়াহ এর অঙ্গীকার সত্য৷

৬৮. ইসলামই আল্লাহ তাআলার একমাত্র মনোনীত ধর্ম৷

৬৯. ইসলাম ছাড়া জাহান্নাম থেকে মুক্তির অন্য কোনই পন্থা নাই৷

৭০. ইসলামী আইন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে খলিফা নিয়োগ করা জরুরি৷

উপরোক্ত ইসলামের মৌলিক আকিদা সমূহ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতের আকিদা হিসাবে সাব্যস্ত৷ তাই উপরোক্ত আকিদা সমূহ ধারনকারী ব্যক্তিকে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআত এর অনুসারী বলা হবে, উপরোক্ত আকিদা সমূহ বিরোধী কোন কাজ কারো দ্বারা সংঘটিত হলে, সে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত থেকে খারিজ হয়ে যাবে৷ আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে আকিদা দুরস্ত করার মাধ্যমে উপরোক্ত আকিদা সমূহের উপর আমল করার তৌফিক দান করুন, আমিন৷

Loading