نحمده و نصلي علي رسوله الكريم اما بعد
আরে ভাই, আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করছি, মনে রাখতে হবে ভ্রমনের মধ্যেও রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ ও সুন্নত রয়েছে, তাই এখানে ভ্রমনের সুন্নত সমূহ বর্ণনা করা হলো৷
১. কমপক্ষে দুই ব্যক্তি এক সাথে সফরে যাওয়া, পারতপক্ষে একা সফর না করা।
(তিরমিযী, হাঃ নং ২১৬৫)
২. বাড়ী থেকে بسم الله توكلت على الله পড়ে বের হওয়া।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ৫০৯৫)
৩. যানবাহনের দরজায় ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে বলতে পা রাখা।
(আবু দাউদ, হাঃ নং ২৬০২)
৪. যানবাহনে ভাল ভাবে আসন গ্রহণের পর তিনবার আল্লাহু আকবার বলে এই দু‘আ পড়া :
اللهُمَّ بِكَ أَصُولُ وَبِكَ أَحُولُ وَبِكَ أَسِيرُ
بسم الله و الحمد لله سُبْحَانَ الَّذِي سَخَّرَ لَنَا هَٰذَا وَمَا كُنَّا لَهُ مُقْرِنِين وَإِنَّا إِلَىٰ رَبِّنَا لَمُنقَلِبُونَ اللَّهُمَّ هَوِّنْ علَيْنا سفَرَنَا هذا وَاطْوِ عنَّا بُعْدَهُ ، اللَّهُمَّ أَنتَ الصَّاحِبُ في السَّفَرِ ، وَالخَلِيفَةُ في الأهْلِ. اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ وعْثَاءِ السَّفَرِ ، وكآبةِ المنظَرِ ، وَسُوءِ المنْقلَبِ في المالِ والأهلِ وَالوَلدِ
(আবু দাউদ, হাদীস নং ২৫৯৮, ২৫৯৯)
৫. সফরে কোথাও অবস্থানের প্রয়োজন হলে, কোন জায়গায় এমনভাবে অবস্থান করা, যাতে মানুষের চলাফেরা ইতাদির ব্যাঘাত না ঘটে।
(বুখারী, হাঃ নং ৬২২৯)
৬. নিজে বা যানবাহন উপরের দিকে উঠতে লাগলে আল্লাহু আকবার বলা।
(মুসলিম, হাঃ নং ১৩৪৪)
৭. নিজে বা যানবাহন নীচের দিকে নামতে বা অবতরণ করতে লাগলে সুবহানাল্লাহ বলা।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ২৯৯৩)
৮. দূর হতে গন্তব্যস্থান দৃষ্টিগোচর হতেই এই দু‘আ তিন বারপাঠ করা :
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِيهَا
(তাবারানী আউসাত, হাঃ নং ৪৭৫৫)
৯. গন্তব্যবস্থানে প্রবেশ কালে এই দু‘আ পড়া :
اللَّهُمَّ ارْزُقْنَا جَنَاهَا ، وَجَنِّبْنَا وَبَاهَا ، وَحَبِّبْنَا إِلَى أَهْلِهَا ، وَحَبِّبْ صَالِحَ أَهْلِهَا إِلَيْنَا
(তাবরানী আউসাত, হাঃ নং ৪৭৫৫)
১০. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন : সফরের কার্য শেষ হলেই তাড়াতাড়ি বাড়ী ফিরে আসবে। অযথা সফরকে দীর্ঘ করা ভাল নয়।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৮০৪)
১১. দীর্ঘ দিনের সফর শেষে বাড়ী প্রত্যাবর্তনকালে হঠাত করেই ঘরে প্রবেশ না করা। বরং প্রথমে নিজ গ্রাম বা মহল্লার মসজিদে এসে অবস্থান করা ও দু‘রাক‘আত নামায পড়া। অতঃপর বাড়ীতে আসার সংবাদ পৌঁছিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে লোকজনের সাথে সাক্ষাত করে নিজ বাড়ীতে প্রবেশ করা। তেমনিভাবে দীর্ঘদিন সফর হতে পিরে এসে গভীর রাতে বাড়ীতে প্রবেশ না করা।
(মুসলিম, হাঃ নং ২৭৬৯/ বুখারী শরীফ, হাঃ নং ১৮০০)
বি.দ্র. সফরের প্রোগ্রামই এরূপ বানাবে যাতে সকাল হলে বাড়ী পৌঁছা যায়। তবে ঘরের লোকদের যদি তার গভীর রাতে পৌঁছার সংবাদ জানা থাকে এবং তারা তার জন্য অপেক্ষায় থাকে, তবে রাতে এসে সরাসরি ঘরে প্রবেশ করায় কোন দোষ নেই।
(বুখারী শরীফ, হাঃ নং ৫২৪৭)
১২. সফরে কুকুর, ঘুংড়ু ও গলঘন্টী সঙ্গে না রাখা। কেননা, শয়তান এগুলোর পিছু নেয়, তাতে সফরের বরকত চলে যায়। উল্লেখ্য, সখ করে বাড়ীতে কুকুর পালা শরীয়তে নিষেধ।
(মুসলিম, হাঃ নং ১৫৭৪/ মুসলিম শরীফ, হাঃ নং ২১১৩)
১৩. সফর হতে প্রত্যাবর্তন করে এই দু‘আ পড়া :
آئِبُونَ ، تَائِبُونَ عَابِدُونَ ، لِرَبِّنَا حَامِدُونَ
بِسْمِ اللَّهِ مَجْرَاهَا وَمُرْسَاهَا ۚ إِنَّ رَبِّي لَغَفُورٌ رَّحِيمٌ وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّمَاوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
(তিরমিযী, হাঃ নং ৩৪৪০)
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে আমল করার তৌফিক দান করুন, আমিন৷