মাওলানা মওদুদী বাতিলপন্থী নাকি হকপন্থী? তা আপনি তার লিখা বইয়ের উদ্ধৃতি দিলেই বুঝতে পারবেন।
মওদুদীর কলম বলা যায় হাজ্জাজী কলম। নবী রাসূল থেকে নিয়ে হকপন্থীদের উপর যেমন তার কলম ছিল খরগ স্বরূপ, তেমনি কিছু বাতিলের বিরুদ্ধেও তার কলম ছিল সিদ্ধহস্ত। সে এতটাই বেপরোয়া এবং বেয়াদব ছিল যে, নবীদের সমালোচনা করতেও দ্বিধা করেনি। সাহাবায়ে কিরামতো তার কাছে কিছুই না। আর আল্লাহ তায়ালা এবং ফেরেস্তাদের সম্পর্কেও পোষণ করতো ভ্রান্ত আক্বিদা।
প্রমাণ স্বরূপ কয়েকটি ভ্রান্ত আক্বিদার নজীর নিচে উপস্থাপিত হল
আল্লাহ পাক সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
“যে ক্ষেত্রে নর-নারীর অবাধ মেলামেশা, সেক্ষেত্রে যেনার কারণে (আল্লাহ পাকের আদেশকৃত) রজম শাস্তি প্রয়োগ করা নিঃসন্দেহে জুলুম।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাফহীমাত, ২য় খণ্ড, ২৮১ পৃষ্ঠা)
ফেরেশতা সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
“ফেরেশতা প্রায় ঐ জিনিস যাকে গ্রীক, ভারত ইত্যাদি দেশের মুশরিকরা দেবী-দেবতা স্থির করেছে।” (নাঊযুবিল্লাহ)
(তাজদীদ ও ইহইয়ায়ে দ্বীন, ১০ পৃষ্ঠা)
নবীদের ক্ষেত্রে মওদূদী সাহেবের বেয়াদবীমূলক মন্তব্য
হাদীসের বিশাল ভান্ডার আমাদের সামনে রয়েছে। কোন একটি হাদীস কোথাও নেই, যাতে নবীদের সমালোচনা করা হয়েছে। কোন নবীর ব্যাপারে তির্যক মন্তব্য বা খাট করা হয়েছে। কিন্তু মওদুদী সাহেব চরম ঐদ্ধতার সাথে বিভিন্ন নবীদের তার বেয়াদবী কলমে করেছেন নোংরাঘাত। নবীদের ব্যাপারে তার বেয়াদবীমূলক বক্তব্যের কয়েকটি উদাহরণ পেশ করছি।
১- আম্বিয়া আলাইহিমুছ ছালাত ওয়াস সালাম সম্পর্কে কুফরী আক্বীদাঃ “নবীগণ মা’ছূম নন। প্রত্যেক নবী গুনাহ করেছেন।” (নাঊযুবিল্লাহ) (তাফহীমাত, ২য় খণ্ড, ৪৩ পৃষ্ঠা)
২-মুসা আঃ এর উদাহরণ ঐ তাড়াহুরাকারী বিজেতার মত, যে নিজের অধীনতদের নির্দেশ দেয়া ছাড়াই মার্চ করতে করতে চলে যায়, আর পিছনে জংলার অগ্নির মত বিজিত এলাকায় বিদ্রোহ ছড়িয়ে যায়। [নাউজুবিল্লাহ] {রেসালায়ে তরজুমানুল কুরআন-২৯/৪-৫}
৩-হযরত দাউদ আঃ তার এলাকার ইসরাইলীদের সাধারণ রেওয়াজের বশবর্তী হয়ে উরিয়ার কাছ থেকে তালাকের আবেদন করেন। [নাউজুবিল্লাহ] {তাফহীমাত-২/৪২, দ্বিতীয় প্রকাশ, (তাফহিমুল কোরআন(উর্দু):৪র্থ খণ্ড, সুরা সাদ, ৩২৭ পৃ. ১ম সংস্করণ, অক্টোবর ১৯৬৬ইং)}
৪-হযরত দাউদ আঃ যে কাজটি করেছিলেন তাতে প্রবৃত্তির কামনার কিছু দখল ছিল, শাসন ক্ষমতার অসংগত ব্যবহারের সাথেও তার কিছু সম্পর্ক ছিল, এবং তা এমন কোন কাজ ছিল যা কোন ন্যায়নিষ্ঠ শাসকের জন্য শোভনীয় ছিল না। [তাফহীমুল কুরআন-১৩/৯৫, আধুনিক প্রকাশনী, ১১শ প্রকাশ}
৫-“হযরহ আদম আলাইহিস সালাম মানবিক দূর্বলতায় আক্রান্ত ছিলেন। তিনি শয়তানী প্রলোভন হতে সৃষ্ট তরিৎ জযবায় আত্মভোলা হয়ে নিজ নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলেন। ফলে আনুগত্যের উচ্চ শিখর হতে নাফারমানীর অতল গহ্বরে গিয়ে পড়েন।” (তাফহিমুল কোরআন (উর্দু): ৩য় খণ্ড, ১২৩ পৃ.)
৬-“হযরত নূহ আলাইহিস সালাম চিন্তাধারার দিক থেকে দ্বীনের চাহিদা হতে দূরে সরে গিয়েছিলেন। তার মধ্যে জাহিলিয়াতের জযবা স্থান পেয়েছিল।” (তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, ৩৪৪ পৃ. ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)
৭- হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ “এখানে আর একটি প্রশ্নের উদ্রেক হয় যে, হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম যখন নক্ষত্র দেখে বলেছিলেন, এটা আমার প্রতিপালক এবং চন্দ্র-সূর্য দেখে এগুলোকেও নিজের প্রতিপালক হিসাবে আখ্যা দিয়েছিলেন, তখন সাময়িকভাবে হলেও কি তিনি শিরকে নিপতিত হননি?”(তাফহিমুল কোরআন ১মখণ্ড, ৫৫৮ পৃ.)
৮-“নবী হওয়ার পূর্বে মুসা আলাইহিস সালাম দ্বারা একটি বড় গুনাহ হয়েছিল। তিনি এক ব্যাক্তিকে কতল করেছিলেন।”
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ১ম খণ্ড, ৩১ পৃ.)
৯-“হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম সম্পর্কেঃ ‘আমাকে মিসরের রাজকোষের পরিচালক নিয়োগ করুন’- এ কথাটি বলে শুধু অর্থমন্ত্রী হওয়ার জন্যই প্রার্থনা করেননি। কারো কারো ধারনা,বরং তিনি এ বলে ডিকটিটরীই চেয়েছিলেন মৌলিকভাবে। এরই ফলশ্রুতিতে বর্তমান ইতালীর মুসোলিনির যে মর্যাদা তিনিও এর কাছাকাছি মর্যাদার অধিকারী হয়েছিলেন।”
(তাফহীমাত: ২য় খণ্ড, ১২২ পৃ. ৫ম সংস্করন এবং নির্বাচিত রচনাবলী(বাংলা) ২য় খণ্ড, ১৫১ পৃ, আধুনিক প্রকাশনী, ১ম সংস্করন ১৯৯১ইং)
১০-“হযরত ইউনুস আলাইহিস সালাম এর দ্বারা রিসালাতের দায়িত্ব আদায় করার ব্যাপারে কিছু ত্রুটি হয়ে গিয়েছিল। সম্ভবত তিনি ধৈর্যহারা হয়ে নির্ধারিত সময়ের পূর্বেই আপন স্থান ত্যাগ করে চলে গিয়েছিলেন।”
(তাফহিমুল কোরআন: ২য়খণ্ড, সূরা ইউনুস (টিকা দ্রষ্টব্য) ৩য় সংস্করণ, ১৯৬৪ ইং)
১১-“হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম মারা গেছেন একথাও বলা যাবেনা, বরং বুঝতে হবে ব্যাপারটি অস্পষ্ট।”
(তাফহিমুল কোরআন ১মখণ্ড (সুরা নিসা), ৪২১ পৃ.)
১২- হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কেঃ
“আল্লাহ তা’য়ালার নিকট কাতর কন্ঠে এই আবেদন করুন, যে কাজের দায়িত্ব আপনাকে দেওয়া হয়েছিল তা সম্পন্ন করার ব্যাপারে আপনার দ্বারা যে ভুল ত্রুটি হয়েছে কিংবা তাতে যে অসম্পূর্ণতা রয়ে গেছে তা যেন তিনি ক্ষমা করে দেন।”
(তাফহিমুল কোরআন (বাংলা) ১৯শ খণ্ড, ২৮০পৃ. মুদ্রনেঃ ওরিয়েন্টাল প্রেস, ঢাকা ১৯৮০ ইং এবং কোরআনের চারটি মৌলিক পরিভাষা (বাংলা) ১১২পৃ. ৮ম প্রকাশ, আধুনিক প্রকাশনী: জুন ২০০২)
১৩-“মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মানবিক দূর্বলতা থেকে মুক্ত ছিলেন না। অর্থাৎ তিনি মানবিক দূর্বলতার বশীভূত হয়ে গুনাহ করেছিলেন।”
(তরজমানুল কোরআন ৮৫ তম সংখ্যা, ২৩০পৃ. ও তরজমানুস্ সুন্নাহ, ৩য় খণ্ড, ৩০৫ পৃষ্ঠা)
১৪-“মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে মনগড়া কথা বলেছেন এবং নিজের কথায় নিজেই সন্দেহ পোষণ করেছেন।”
(তরজমানুল কোরআন, রবিউল আউয়াল সংখ্যা, ১৩৬৫ হিজরী)
১৫- হযরত মুহাম্মদ (সা.) রিসালাতের দায়িত্ব পালনে ত্রুটি করেছেন, তাকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
(তাফহীমুল কুরআন, সুরায়ে নসর এর তাফসীর)
সাহাবা কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে ভ্রান্ত আক্বীদাঃ
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের আক্বিদা হল-সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার উর্দ্ধে। তাদের দোষ বর্ণনা করা হারাম ও কবিরা গুনাহ”। (শরহুল আকায়েদ পৃষ্ঠা ৩৫২)
মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেছেন-আমি [সাহাবাদের] তাদের প্রতি সন্তুষ্ট আর তারাও আমার অনুগত। {সূরা তাওবা-১০০}
রাসূল সাঃ সাহাবাদের সম্পর্কে বলেন-আমার সাহাবীরা তারকাতুল্য। তোমরা যারই অনুসরণ করবে হেদায়েত পেয়ে যাবে। {কানুযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-১০০২, জামেউল আহাদীস, হাদীস নং-২৪৩৫৫}
অথচ দেখুন মওদুদী সাহেব কিভাবে সাহাবায়ে কিরামকে আক্রমণ করেছেন নোংরা উক্তিতে-
১। “সাহাবায়ে কেরাম সমলোচনার বাহিরে নন। তাদের দোষ বর্ণনা করা যায়। সাহাবাদের সম্মান করার জন্য যদি ইহা জরুরী মনে করা হয় যে, কোনভাবেই তাদের দোষ বর্ণনা করা যাবে না তবে আমার (মওদুদী) দৃষ্টিতে ইহা সম্মান নয় বরং মূর্তি পূজা। যার মূলোৎপাটন এর লক্ষ্যেই জামাতে ইসলামীর জন্ম”। (তরজুমানুল কুরআন ৩৫শ’সংখ্যা, পৃষ্ঠা ৩২৭)
২।) “সাহাবায়ে কিরাম অনেকে মনগড়া হাদিস বর্ণনা করেছেন।”
(তরজমানুল কোরআন ৩৫ সংখ্যা) ঙ/৩)
৩) “সাহাবাদের মধ্যে জাহেলিয়াতের বদ-স্বভাবের পুনরাবৃত্তি ঘটে।”
(তাফহীমাত ২য় খণ্ড, ১৫৫ পৃষ্ঠা)
৪) “হযরত আবু বকর রাযিয়াল্লাহু আনহু খিলাফতের দায়িত্ব পালনে সম্পুর্ণ অযোগ্য ছিলেন”।
(তাজদীদ ও ইয়াহইয়ায়ে দীন: পৃষ্ঠা ২২,)
৫) “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ওফাতের সময় ব্যাক্তিসম্মানের কু-মনোবৃত্তি হযরত উমর (রঃ)কে পরাভূত করেছিল।
(তরজুমানুল কুরআন, রবিউস সানি ৩৫৭ হিজরী)।
৬) “হযরত উসমান রাযিয়াল্লাহু আনহু এর মাঝে সজন-প্রীতির বদগুণ বিদ্যমান ছিল।
(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ৯৯)
৭) “হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বীয় খেলাফতকালে এমন কিছু কাজ করেছেন যাকে অন্যায় বলা ছাড়া উপায় নেই। (খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৪৬/১৪৩)
৮) “হযরত মুয়াবিয়া রাযিয়াল্লাহু আনহু স্বার্থবাদী, গনিমতের মাল আত্মসাৎকারী, মিথ্যা সাক্ষ্যগ্রহকারী ও অত্যাচারী ছিলেন”।
(খেলাফত ও মুলকিয়াত, পৃষ্ঠা ১৭৩)
পবিত্র কুরআন শরীফ সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য
কোরআন করিম হেদায়েতের জন্য যথেষ্ট, কিন্তু নাজাত বা মুক্তির জন্য নয়।” (তাফহিমাত, ১ম খণ্ড, ৩১২ পৃষ্ঠা)
আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি কুরআন অবতীর্ণ করেছি যেন আপনি (নবী) মানবজাতিকে অন্ধকারের অতল গহবর থেকে উদ্ধার করে আলোর পথ দেখাতে পারেন। সূরা ইবরাহীম, আয়াতঃ ১।
মুফাসসিরীনে কেরামের ব্যাখ্যানুযায়ী আলোর পথই হচ্ছে মুক্তির পথ। কে সত্যবাদী? মহান মালিক নাকি মাওদূদী সাহেব?
নবীজী সাঃ এর হাদীস সম্পর্কে ঔদ্ধত্বপূর্ণ বক্তব্য
“হাদীস কিছু লোক থেকে কিছু লোক পর্যন্ত অর্থাৎ মানুষের মুখে মুখে বর্ণিত হয়ে আসছে। এসবকে বড়জোর সঠিক বলে ধারণা করা যেতে পারে কিন্তু দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করার কোন অবকাশ নেই। আর একথা স্পষ্ট যে, আল্লাহর দীনের যে সকল বিষয় এতো গুরুত্বপূর্ণ যে, এগুলোর দ্বারা ঈমান ও কাফেরের মাঝে পার্থক্য নির্ণীত হয় সেগুলো গুটিকয়েক লোকের বর্ণনার উপর নির্ভর করে মানুষকে বিপদগ্রস্ত করা আল্লাহ তায়ালা কখনো পছন্দ করতে পারেন না।”
(রাসায়েল ও মাসায়েল, ৬৭ পৃষ্ঠা) কী কুখ্যাত মন্তব্য!!! একটু বিবেচনা করুন।
মওদূদী সাহেবের আরো কিছু ভ্রান্ত মতবাদ
ইসলামী রীতিনীতি
“পোশাক পরিচ্ছদ, চাল-চলন, আকৃতি-প্রকৃতি চুল কার্টিং ইত্যাদির ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করতে কোন দোষ নেই”। (তরজুমানুল কুরআন, ছফর সংখ্যা, ১৩৬৯ হিজরী)
ইসলাম বলে, ইসলামী পোশাক-পরিচ্ছদ-প্রকৃতি চাল-চলন ইত্যাদি গ্রহণ করবে। এসব ব্যাপারে বিধর্মীদের অনুকরণ করবে না। (এমদাদুল মুফতিয়ীন, ২য় খণ্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা)
প্রসঙ্গঃ দাড়ি কাটা ও রাখা
ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত। রাসূল সা. ইরশাদ করেছেন-তোমরা গোফ খাট কর আর দাড়ি লম্বা কর। (তিররমিযী শরীফ, হাদিস নং-২৭৬৩)
এছাড়া অন্য হাদিসে এসেছে-পুরুষদের স্বাভাবিক প্রকৃতি হল সে তার দাড়ি লম্বা রাখবে। (আবু দাউদ শরীফ, হাদিস নং-৫৩)
দাড়ি লম্বা করার কথা হয়েছে হাদিসে। কাটার কথা কোথাও নেই। তাই সাহাবায়ে কিরামের আমলই আমাদের একমাত্র ভরসা এই ক্ষেত্রে যে, দাড়ি কতটুকু বড় রাখতে হবে? মুসান্নাফে ইবনে শাইবাতে এসেছে-হযরত ইবনে ওমর রা. এর আমল ছিল-তিনি দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখতেন। সুতরাং দাড়ি এক মুষ্টি পরিমাণ রাখা ওয়াজিব। এর চে’ কম দাড়ি রাখা আর চেছে ফেলার মাঝে কোন পার্থক্য নাই। যেমন জোহরের ফরজ নামায চার রাকাত। দুই রাকাত সারা জীবন পড়লেও যেমন জোহর কোনদিনও আদায় হবেনা। তেমনি এক মুষ্টির কম দাড়ি রাখলে তা কোনদিনও দাড়ি রাখা বলে সাব্যস্ত হবেনা।
অথচ মওদুদী সাহেবের আক্বিদা দেখুন কী বলে?
“দাড়ি কাটা ছাঁটা জায়িয। কেটে ছেঁটে এক মুষ্টির কম হলেও ক্ষতি নেই। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পরিমাণ দাড়ি রেখেছেন সে পরিমাণ দাড়ি রাখাকে সুন্নত বলা এবং এর অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে মারাত্মক অন্যায়”। (রাছায়েল মাছায়েল, ১ম খণ্ড, ২৪৭ পৃষ্ঠা)
প্রসঙ্গঃ সুন্নতে রাসূল
“হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত, আখলাককে সুন্নত বলা এবং তা অনুসরণে জোর দেয়া আমার মতে সাংঘাতিক ধরনের বিদয়াত ও মারাত্মক ধর্ম বিকৃতি।
(রাছায়েল মাছায়েল, ২৪৮ পৃষ্ঠা)
ইসলাম বলে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদত,আখলাক ও স্বভাব-চরিত্র আমাদের অনুকরণের জন্য উত্তম নমুনা বা সুন্নত। মহান রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন-তোমাদের জন্য নবীজীর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব, আয়াতঃ ২১, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৫৪৪}
প্রসঙ্গঃ দ্বীনের আসল উদ্দেশ্য
“দ্বীনের আসল মকছুদ হলো ইসলামী হুকুমত। নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত ইত্যাদি সমস্ত ইবাদত হলো উক্ত মকছুদ অর্জনের মাধ্যম”।
(আকাবেরে উম্মত কী নজরমে, ৬৪ পৃষ্ঠা)
* ইসলাম বলে, দ্বীনের আসল মকছুদ নামায, রোযা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদি কায়েম করা। ইসলামী হুকমত উক্ত মকছুদ অর্জনে সহায়ক। (শরহুল আকায়েদ, ৩০৪ পৃষ্ঠা)
এত সব ভ্রান্ত আক্বিদা পোষণ করার পরও যদি কেউ তাকে আল্লাহ ওয়ালা বলে সম্বোধন করে তাহলে তাদের ক্ষেত্রে আমাদের কী’বা বলার আছে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের মওদুদী ফিতনা এবং কথিত আহলে হাদীস ফিতনা, এবং বেদআতি ভন্ড পীরের ফিতনা থেকে আমাদের দেশে সাধারণ মুসলমানদের হিফাযত করুন। আমীন।