نحمده و نصلي علي رسوله الكريم اما بعد
১৪৪০ হিজরী এর শাবান মাস, বিভিন্ন মাদ্রাসাতে উলামায়ে কিরাম শাবান মাসের চাঁদ দেখা নিয়ে আলোচনা সমালোচনায় লিপ্ত, সাধারণ মানুষের মধ্যেও এর প্রভাব পরে। সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চাঁদ দেখা কমিটি থাকার পরেও কেন চাঁদ দেখা নিয়ে বিভ্রান্তি হবে? এ প্রশ্ন সবার মনে যেন নাড়া দিয়ে গেছে। পাশাপাশি প্রস্তাবনা পেশ হতে লাগলো উলামায়ে কিরামের উদ্যোগে একটি অরাজনৈতিক-বেসরকারি চাঁদ দেখা কমিটি বানানো হোক, যা উলামায়ে কিরামের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। উদ্দেশ্য আরবি মাসের হিসাব সংরক্ষণ এবং চাঁদ দেখার বিভ্রান্তি দূর করন, এ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে শুরু হলো পথচলা, মজলিসে তানফিযুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ বাংলাদেশ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হযরত মাওলানা ইসমাইল সিরাজী সাহেব দা. বা. এর নিকট আসতে থাকে দ্বীনি এ জিম্মাদারী পালনের ভার এর প্রস্তাবনা। দ্বীনি এই ফিকর কে সামনে রেখে তিনি দৌড়ে যান বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামিক গবেষণা কেন্দ্র মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ বা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ বসুন্ধরা ঢাকায়, পরামর্শ করেন নিজের ঘনিষ্ঠ উস্তাদগনের সাথে। তাদের সাথে পরামর্শ শেষ করে সিরাজগঞ্জের স্থানীয় বিশিষ্ট উলামায়ে কিরামগনের সঙ্গে পরামর্শ সাপেক্ষে মুফতি আবু সাদিক কাসেমী দাঃ বাঃ কে উপদেষ্টা রেখে “চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ” নামে শুরু হয় পথচলা। চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশকে মজলিসে তানফিযুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ বাংলাদেশ এর পরিচালনাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেখে, একটি পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্র তৈরি করা হয়। মূলত স্বতন্ত্র গঠনতন্ত্রের আলোকেই চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ পরিচালিত হয়ে আসছে, ১৪৪০ হিজরী রমাজান মাস থেকে অনলাইনে প্রকাশিত হতে থাকে চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ এর প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত। গঠনতন্ত্র মতে এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়া হয় সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিকেও।
বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ জেলায় চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ এর সদস্য রয়েছে, যাচাই-বাছাইয়ের ভিত্তিতে দ্বীনদার মুসলমানগন সদস্য হতে পারেন, প্রতি আরবি মাসে ২৯ তারিখে চাঁদ পর্যবেক্ষণ পরিষদ বাংলাদেশ তার কেন্দ্রীয় কার্যালয় রহমানিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা সিরাজগঞ্জ, বাংলাদেশে মজলিসে আমেলার বৈঠক করেন। সারাদেশ থেকে পাঠানো সদস্যদের তথ্য, সরকারি সদস্যদের তথ্য ও ভৌগলিক অবস্থাকে সামনে রেখে, চাঁদ দেখা যাক বা না যাক, একটি সুনিশ্চিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন। ইসলামী শরীয়ত বিভিন্ন আমাল সঠিক নির্দিষ্ট সময়ে পালন করার গুরুত্ব দিয়েছে৷ নামাজের জন্য নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, হজের জন্য নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, রমাজানের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে রয়েছে, এভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে কারীমে বিভিন্ন আমালের নির্দিষ্ট সময় বর্ণনা করেছেন৷ আর এই সময় নির্ধারণকে সংযুক্ত করেছেন ভৌগোলিকভাবে চাঁদ ও সূর্যের সাথে৷ সুন্নত অনুযায়ী রসূলে আকরাম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জামানা থেকে আজ পর্যন্ত চাঁদ দেখে বেশ কিছু আমলের সময় নির্ণয় হয়ে আসছে৷ তার মধ্যে একটি বৃহৎ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আরবি মাসের তারিখ নির্ধারণ, এজন্য প্রতি আরবি মাসের ২৯ তারিখে সর্বসম্মতিক্রমে নতুন চাঁদ দেখার চেষ্টা করা আমাদের কর্তব্য, আল্লাহ আমাদের কবুল করুন৷