কোনভাবেই সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা-ঈদ পালন করা সম্ভব নয়

ইসলামী শরীয়ত, ভৌগোলিক ও জ্যোতির্শাস্ত্রীয় বাস্তবতার আলোকে কোনভাবেই সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা-ঈদ পালন করা সম্ভব না। যাদের এ বিষয়ে স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ধারণা আছে, তারা কখনো এমন অযৌক্তিক ও অসম্ভব দাবী তুলতে পারেন না। রোযা-ঈদের দিন-তারিখ কোন গোষ্ঠী বা সংগঠনের নিয়ন্ত্রণাধীন কোন আমল না, এটি আসমান-জমিনের রবের বিশ্বজাহান পরিচালনার অনন্য বিধান। এর জন্য কুরআন-সুন্নাহর সঠিক ব্যখ্যা-বিশ্লেষণই একমাত্র সমাধান।

গতকাল (১৫ মার্চ) বুধবার রাজধানীর আজিমপুর এম ডি মিলনায়তনে রোযা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তি নিরসন জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা-ঈদ: ইসলাম কী বলে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।সভায় বক্তারা বলেন, রোযা-ঈদ পালনে চাঁদ দেখার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (রমজানের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা রাখবে না এবং (শাওয়ালের) চাঁদ না দেখা পর্যন্ত রোজা রাখা বন্ধ করবে না। [সহিহ মুসলিম ১/৩৪৭] অন্য হাদিসে আছে, ‘(শাবানের ২৯ দিন পূর্ণ করার পর) তোমরা যদি রমজানের চাঁদ না দেখ তাহলে শাবান মাস ৩০ দিন পূর্ণ করবে।’ [মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক : হাদিস নং ৭৩০১] কুরআন-সুন্নাহর আলোকে মীমাংসিত বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি না করার কারণে কিছু মানুষ সারাবিশ্বে একই দিনে রোযা-ঈদ পালনের অবৈজ্ঞানিক দাবী পেশ করে। যা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। সভায় সর্বসাধারণের নিকট বিষয়টি আরো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে রোযা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তি নিরসন জাতীয় কমিটি। তন্মধ্যে কয়েকটি হলো- ১. জাতীয় সেমিনার আয়োজন করা। ২. শীর্ষ ওলামায়ে কেরামের বক্তব্য অনলাইন-অফলাইনে ব্যপক প্রচারের ব্যবস্থা করা। ৩. সারাদেশে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে চাঁদ দেখার সেচ্ছাসেবী মানুষ তৈরী করা এবং রোযা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তি নিরসনে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটিকে সহযোগিতা করা, ইত্যাদি।

রোযা-ঈদ পালনে বিভ্রান্তি নিরসন জাতীয় কমিটির আহবায়ক মুফতি আ ফ ম আকরাম হুসাইনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মুফতি মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া কামরাঙ্গীরচর ঢাকা’র মুহাদ্দিস মুফতি রায়হান ফারহাত, জামিয়া শারিফিয়া আরাবিয়া লালবাগ ঢাকার মুহতামিম মুফতি হোসাইন সোহরাব, জামিয়া মুহাম্মদিয়া আরাবিয়া মুহাম্মদপুর, ঢাকা’র শিক্ষাসচিব মুফতি ইসহাক মাহমুদ, আগারগাঁও তালতলা সরকারি কলোনি জামে মসজিদের খতীব মুফতি মুহাম্মদুল্লাহ নোমানী, জামিয়া আরাবিয়া রবিউল উলূম ঢাকা’র প্রধান মুফতি মুফতি মুহাম্মদ আলী কাসেমী, বুয়েট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মুফতি রাশেদুর রহমান প্রমুখ।আজিমপুর ছাপড়া মসজিদের ইমাম মুফতি ফয়জুল্লাহ বিন মুখতারের ধন্যবাদ জ্ঞাপন ও জামিয়া নূরিয়া ইসলামিয়া আশরাফাবাদ কামরাঙ্গীরচর ঢাকার মুহাদ্দিস মুফতি ইলিয়াছ কাসেমীর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে মতবিনিময় সভা আরম্ভ হয়। সভায় বক্তব্য রাখেন, ইসলামবাগ শাতিউল বাহার মসজিদের খতীব মুফতি হাবীবুর রহমান, নবাবগঞ্জ বড় মসজিদের ইমাম মুফতি মামুন রাহমানী, আমলীগোলা শাহী মসজিদের খতীব মুফতি আল আমিন আজাদ, বায়তুস সালাম জামে মসজিদের খতীব মুফতি দিলাওয়ার হুসাইন আশরাফী, ইশা’আতে দীন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি আবুল হাসান কাসেমী, আন নূরী মসজিদের খতীব মুফতি আব্দুর রহমান, আমীনবাগ জামে মসজিদের খতীব মুফতি ইসমাইল হাবীবী, আল আমিন জামে মসজিদের খতীব মুফতি সাইফুল্লাহ নোমানী, মারকাযুল ফুরকান ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মুফতি সালীমুল্লাহ খান সালীম, তালীমুল কুরআন মাদরাসা ঢাকার মুহতামিম মাওলানা কামাল উদ্দীন নোমানী, মুফতি আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।

Loading