Rahmania Madrasah Sirajganj

আরবী তারিখঃ এখন ৮ রমজান ১৪৪৪ হিজরি, ৩১ মার্চ ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬:৫০ মিনিট (প্রতিদিন মাগরিবের পর তারিখ পরিবর্তন হয়)

আকাবিরগন সংসদে গিয়ে কি করতেন?

পাকিস্তানের মুফতি মাহমুদ (রহঃ) মাঝেমধ্যে কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে জানতে চাইতেন!

ইয়া আল্লাহ, এ আমার কোন গুনাহের সাজা যে তুমি আমাকে পার্লামেন্টে পর্যন্ত নিয়ে আসলে।

যেখানে মেয়েরা তাদের বেপর্দা জাহির করে, যেখানে অহরহ মিথ্যা ও বানোয়াট বলা হয়, আমি সারা জীবন কোরান হদিসের দরস দিয়ে আসছি কেন তুমি আমাকে এমন সাজা দিচ্ছো..

ইতিমধ্যেই কাদিয়ানিদের খেলাপ মহা আন্দোলন শুরু হয়ে গেল, আহলে সুন্নতের সবাই এক কাতারে এসে দাঁড়ালো। সেই দলে দেওবন্দি, ব্রেলভী, আহলে হাদিস, জামায়াতে ইসলামী, সবাই একজোট হয় মুফতি মাহমুদ রহঃ এর নেতৃত্বে।

সংসদে হৈচৈ তুমুল আলোচনা, কাদিয়ানিদের পক্ষে বিপক্ষে।
কাদিয়ানিদের পক্ষের নেতৃত্ব ছিলেন তদানীন্তন বিশিষ্ট পার্লামেন্ট্রিয়ান ও বিশিষ্ট ওকিল মির্জা নাছির,
তিনি তার স্বপক্ষে দলিল পেশ করে বলতে লাগলেন…

অমুকদিন অমুক দেওবন্দি আলেম বলেছিলেন ব্রেলভী কাফের, কারন তারা কবরে সেজদা করে এবং গাইরুল্লার নামে( আল্লাহ ব্যাতিত) অন্যের নামে পশু জবাই করে মানত করে,
তারপর তিনি বললেন অমুক দিন অমুক ব্রেলভী আলেম ফতোয়া দিলেন দেওবন্দি কাফের, কারন তারা রসুলের সাথে বেআদবি করে, তারা গোস্তাখে রসুল এবং তিনি তা দলিল সহ পেশ করে বললেন…

এই আলেমরাই মুসলমানদের কাফের বানায়,
তারা মুসলমান কম কাফের বানায় বেশি, তাই আজ তারা আমাদের কাদিয়ানিদেরও অনুরূপ কাফির বানানোর ফতোয়া নিয়ে সংসদে এসেছেন।

সংসদের স্পিকার ও সবাই মির্জা নাছিরের কথায় অনেক যুক্তি পেলেন, এবার পালা আহলে সুন্নতের লিডার মুফতি মাহমুদ রহঃ এর, উত্তরে তিনি কি বলবেন তা নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন..

মুফতি সাহেব সংসদে দাঁড়িয়ে বিসমিল্লাহ বলে বলা শুরু করলেন

প্রথমে তিনি মির্জা নাছিরের কথাগুলো রিপিট করে সত্যতা স্বীকার করলেন এবং বললেন হ্যাঁ দেওবন্দের ও ব্রেলভী আকিদার কিছু আলেম কথাগুলো বলেছেন,
এবং পরবর্তীতে ব্রেলভী আলেমরা সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে যারা কবরে সেজদা করে তারা অবশ্যই কাফের যারা আল্লাহ ব্যাতিত অন্যনামে পশু জবাই করে তারা অবশ্যই কাফের এবং তা তারা করেনা এবং সেইরকম আকিদাও তারা রাখে না।

অনুরূপ দেওবন্দের আলেমরাও স্বীকার করেছেন যারা আল্লাহর রসুলের সাথে বেআদবী করে তারা অবশ্যই কাফের এবং তা অবশ্যই আমরা করিনা এবং সেইরকম আকিদাও আমরা রাখিনা।

আর কাউকে যখন কোন কারনে কাফের ফতোয়া দেয়া হয়( যে কারনে কোরান হাদিসের আলোকে সে কাফের হবে) সে যদি ঐ কারন অস্বীকার করে তখন সে আর কাফের হয়না।

এখন তোমাদের আমরা কাফের বলছি কোরান হাদিসের আলোকে, যেখানে বলা আছে নবী মুহাম্মদ শেষ নবি, তার পরে আর কোন নবী নেই, এখন এই কথাগুলো যদি তোমরা স্বীকার করে নাও, তোমাদের আমরা অবশ্যই কাফের বলব না তোমরা আমাদের ভাই, আর যদি তোমরা অস্বীকার করো তোমরা অবশ্যই কাফের।

সবার হাত তালি.. সংসদ স্তব্দ..রেজাল্ট কাদিয়ানিদের কাফের ঘোষণা….

এরপর একদিন তিনি আবার কেঁদে কেঁদে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে বললেন… আল্লাহ তখন আমি বুঝিনি এখন আমি বুঝেছি কেন তুমি আমাকে সংসদে নিয়ে গেলে।

পড়েছেনঃ 893 জন